ছোট গল্প: অন্য পথে
অন্য পথে
আমাকে আর কেউ বিভ্রান্ত বললে আমি একটি
দশমনি ঘুসি মেরে তার নাক ভেঙ্গে গুড়ো করে দেবো। আমি বলবো, তার মতিভ্রম ঘটেছে। আমার মতে
-
আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট সুস্থ আছি। পৃথিবীটা ঘুরছে। আর পৃথিবীর এই ঘূর্ণনকে অনুসরণ করে সবাই তাদের নিজ নিজ বলয়ের
মধ্যে ঘুরছে। সবাই এখন ব্যস্ত। আমার মতো বেকার যুবকের অদৃষ্টের প্রতি করুনার দৃষ্টির ছোঁয়া দেয়ার সময় কারুর নেই। সবাই
এখন
ব্যস্ত। হ্যাঁ ব্যস্ত। যার যার নিজস্ব আঙ্গিনায়। নিজস্ব বলয়ে।
এ মুহূর্তে এ পৃথিবীটাকে বড় ন্যাংটো মনে হয় আমার। নির্লজ্জ এ পৃথিবীটা।
আপন
করে নিতে পারেনি আমাকে।
ইউনিভার্সিটি'র দেয়া সার্টিফিকেট আমার হাতে। আমি বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর একজন
নাগরিক। দেশের গৌরব। পূর্বে আঠারোবার ইন্টারভিউ দিয়ে উনিশতম ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য
যখন
একটি কর্পোরেশনে গিয়ে হাজির হলাম, ইন্টারভিউ বোর্ডের চেয়ারম্যান সাহেব গম্ভির
ভঙ্গিতে আমাকে শুধালেন, …
গোলক সাহেব,
আপনার পরিচয় দিন।..
আমিও গম্ভীর অথচ রুঢ় ভাষায় বললাম,
…
পরিচয় দরখাস্তের সাথে বায়োডাটাতে পাবেন। আমাকে এরপরে অন্য কোন প্রশ্ন করতে হলে একটা শর্তে আপনাকে
রাজি হতে হবে। ….
চেয়ারম্যান সাহেব তার মোটা ভ্রু
কুঁচকালেন। বোর্ডের অন্য সদস্যদের দিকে সচল তাকালেন। নড়ে চড়ে কঠোর হয়ে বসলেন। সদম্ভে গর্জে উঠলেন,…
কি!
হ্যা,
সত্যটাই আমি বললাম। আপনার সব কটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে আমাকে চাকরির নিশ্চয়তা দিতে হবে। …
আমি লাল চোখ দুটোকে বড় করে চেয়ারম্যান সাহেবের দিকে তাকালাম।
চেয়ারম্যান সাহেব তড়িৎ লাফিয়ে উঠলেন,…
আপনি অসুস্থ! আপনি আসুন!...
আমি উঠে দাঁড়ালাম। চোখ দুটো
উপরে তুলে অপ্রকৃতিস্থ দৃষ্টিতে চেয়ারম্যানের দিকে এক দৃষ্টিতে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। এরপরে অশালীন পদক্ষেপে চলে এলাম।
আমার উনিশতম ইন্টারভিউ দেয়া আর হলো
না।
শালারা! ইন্টারভিউ দিয়ে লাভ কি? যাদেরকে নিবি, তাদের নাম ও এপয়েন্টমেন্ট লেটারতো আগেই রেডি করে রেখেছিস! শালারা!
আমি ইউনিভার্সিটির সর্বোচ্চ ডিগ্রী প্রাপ্ত বাংলাদেশের গৌরব। কেউ আমাকে চাকরি দিলো না। অসুস্থতার অপবাদ দিয়ে আমাকে তাড়িয়ে দিলো। অথচ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ। আমাকে পুনরায়
আর
কেউ বিভ্রান্ত বললে আমি একটি দশমনি ঘুষি মেরে তার নাক ভেঙ্গে গুড়ো করে দেবো!
কর্পোরেশনের বিল্ডিং পেরিয়ে সামনে সু-প্রশস্ত রাজপথ। দিনের মধ্যভাগের জলন্ত সূর্যটা
এখন
আকাশ চূড়ায়। পিচ-ঢালা কালো রাজপথে আগুনের হলকা। রাস্তার পিচ গলে গলে আমার চপ্পলের তলায় লেগে যাচ্ছে। বারো টাকার চপ্পল। রাজপথে অসংখ্য গাড়ি ও রিক্সার ঠেলাঠেলি। রাস্তার
এপার হতে ওপারে যেতে হবে । হঠাৎ করে একটা গাড়ি এসে ঘ্যাচ করে আমার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে পড়লো। টয়োটা
গাড়ি। খয়েরি রঙের টয়োটা। পাশের জানালার কাঁচ সরিয়ে মহিলা ড্রাইভারটি তার থুতনি বের করলো। নীল চশমার
আড়ালে লুকিয়ে থাকা চোখ দুটোকে লাল করে রুদ্র কণ্ঠে গর্জে উঠলো,….
দেখে পথ চলতে পারেন না? আপনাদের জন্য দেখছি ড্রাইভ করাও যাবে না। রাবিশ!...
মহিলাটি গাড়ি নিয়ে শো… করে চলে গেলো। গাড়ির পেছনে লাল প্লেট। ঢাকা চ…, আর পড়তে পারলামনা। গাড়িটি বামে ঘুরে অদৃশ্য হয়ে গেলো।
যাহ, শালী! সরকারি গাড়ি নিয়ে দিন দুপুরে ড্রাইভিং শিখতে বেরিয়েছে। সামনে পেলে এক থাপ্পড়ে গোলাপি গালের মাংস খসিয়ে নিতাম না!
ইন্টারভিউ! শালা! মনের খবর জেনে লাভ কি শালাদের! শালারাতো অন্ধ! আমার মনের ভিতরে কি তারা দেখবে? যদি ঠিকই দেখতে পেতো, তাহলে আমার মনের মাঝে ব্যর্থতার যে আগুন ধাউ ধাউ করে জ্বলছে, সে আগুনে শালারা সবাই পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে বাতাসে উড়তো। দেখছি আর হাটাই যাবে না! আগুন
ঝরা
রোদে মাথার মগজ উতরে পড়বে যেনো!
পকেটে হাত রাখলাম। এক টাকা চার আনা পয়সা বাকি আছে মাত্র। রিক্সায় করে বাসায় যেতে লাগবে চার টাকা। ওইতো একটা খালি রিক্সা সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বলবো নাকি এমন একটা কথা… ওই ব্যাটা রিক্সাওয়ালার পুত রিক্সাওয়ালা! তুই পেছনে বস, আমি চালিয়ে যাই…। রিক্সাওয়ালাকে পেছনে বসিয়ে আমি চালিয়ে নিতে পারলে বাসায় পৌঁছুতে সময়টা কম লাগতো। রিক্সাওয়ালাকে
পঁচিশ পয়সা নচেৎ দিতামই আমি!
নরকের আগুন ঝরছে আকাশ থেকে। আমার বাবার চোখেও এমনি আগুন জ্বলে
সতেরো বছর ধরে। জমি বিক্রি করা পয়সায় তার ছেলেকে শিক্ষাঙ্গনের সর্বোচ্চ ডিগ্রি ধরিয়ে দিয়েছে। ছেলে বড় চাকরি করে তার হৃত জমি কিনে দেবে। প্রাচুর্যের সাহচর্যে বাবার চোখে স্বর্গীয় সুখের শীতল অনুভূতি ছড়াবে। অথচ জীবন নদীর বালুচরে বাবার উচ্চাশার
স্বপ্ন পঙ্গু হয়ে পা হেঁচড়ে হেঁচড়ে চলে। বাবার চোখ দুটো আরো লাল হয়ে জ্বলে। বাবার লাল চকচকে চোখ দুটো আমার দৃষ্টির সর্বত্র হাজার হাজার রক্ত চক্ষুর মরীচিকা হয়ে ভাসতে থাকে।
সারাক্ষন
বাবা সাংঘাতিকভাবে চটে থাকে। এ যুগের বাবাদের ইন্দ্রিয় খারাপ হয়ে গেছে! ছেলেদের জীবনে প্রতিষ্ঠা এনে দেয়া যে বাবাদেরই পবিত্র কর্তব্য! এটা কেন বাবারা বুঝতে চায় না!
বাবার
পিসতুতো বোনের বাসায় থাকি আমি। পিসিমার আদরের ভাইপো আমি। দূর সম্পর্কীয় গরীব ভাইয়ের তিন নম্বরের ছেলেটাকে বাসায় রেখে খেতে দিয়ে পরকালের জন্য পূণ্য কামাই করছেন পিসিমা। পরিবারের
সওদাপাতি থেকে আরম্ভ করে তার কলেজে পড়ুয়া দুই মেয়ের সকল কাজ তিনি আমাকে দিয়ে করিয়ে
নেন। চাকর বাকরদেরকেতো বিশ্বাস নেই! ক্যামব্রিজে পড়ুয়া একমাত্র ছেলেটিকে লিখা চিঠিটি
ও পোস্ট অফিসে গিয়ে ফেলে দেয়ার ভার তিনি আমার উপরেই দেন। অন্যের হাতে দিলে না জানি আদরের শ্রীমানের হাতে
চিঠিটি পৌঁছুতে দেরি হয়ে যায়! বড় আদরের চোখে পিসিমা আমাকে কম করে খাওয়ার পরামর্শ দেন। সাত্ত্বিক করা হয়! রিকশায় না চলে পায়ে হেটে চলা ভালো! এতে শরীরের অলচতা কাটে। ব্যায়াম হয়। পরিবারের আর সকলের খাওয়া শেষ হয়ে গেলে বারান্দার এক কোণে চারটে খেতে দেন আমাকে। তবে পরনের কাপড়-চোপড় ময়লা হয়ে গেলে অবিলম্বে তা ধুয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন। কারণ তা থেকে আবার ঘরের আবহাওয়ায় দুরারোগ্য
ব্যাধির জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে!
তবে আমার জন্য এসব ওনার নিজের করতে হয় না। বাসার একমাত্র চাকরানী কদম্বিনিকে দিয়েই এ কাজগুলো করিয়ে দেন পিসিমা। পিসিমার
পছন্দের প্রশংসা করতে হয়! কদম্বিনিকে ভালো কাপড়-চোপড় পরিয়ে সব সময় সেজে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। এতে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ে। দেবতারা
প্রসন্ন হন।
কদম্বিনি পিসিমার একমাত্র চাকরানী। বয়স সতেরো কি আঠারো। আগে কোন একটা নোংরা বস্তিতে থাকতো। পিসিমার কনিষ্ঠ ভ্রাতা সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। আছে সাড়ে তিন বছর ধরে। আমার জন্য বরাদ্দ কামরাটির ঠিক সামনের হেসেলে থাকে। ইন্ডিয়ান প্রিন্টের শাড়ির আড়ালে দুরন্ত যৌবন কদম্বিনির। আমাকে খাবার দিতে এসে সুযোগ বুঝে যৌবনের ডালি মেলে ধরে আমার সামনে। আমি রক্ত চক্ষু দিয়ে তার দিকে তাকাই। বেহায়ার মতো হাসে কদম্বিনি। ঘন লিপস্টিক মাখা লাল ঠোঁটখানা ছুড়ে ভেংচি কাটে। কারণে-অকারণে আমার রুমে এসে জ্বালাতন করে। আসা যাওয়ার সময় আমার শরীরে তার বুকের নরম মাংসের সুড়সুড়ি লাগায়। বিব্রত বোধ করি আমি। রেগে গিয়ে চাপা ভাষায় গালাগাল করি। কদম্বিনি তবুও হাসে। পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গণিকাদের মতো। কদম্বিনির শরীরের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে লুকিয়ে পাপ-সৌন্দর্য! টকবগে দেহবল্লরী কদম্বিনির!
কদম্বিনির নোংরা আহ্বানে সাড়া দেই না আমি। কদম্বিনী
যখন তার দেহ বল্লরী দেখিয়ে আমাকে আহ্বান করে, তখন আমি পিসিমার বাসায় থাকা একটি আশ্রিতের কথা স্মরণ করি। চাকুরীর খোঁজ করতে এসে যে তার দূর সম্পর্কিয়া এক পিসিমার কাছে আশ্রয় নিয়েছে। গ্রামে থাকা ক্রূদ্ধ বাবার রক্ত চক্ষুকে স্মরণ করলে যার মাথায়ও রক্ত ওঠে!
দুপুরের বাজ পড়া রোদে বাসায় হেঁটে যেতে সাহস হলো না। রাস্তার পাশের পার্কের এক কোণে গাছের ছায়ায় একটি বেঞ্চিতে বসে পড়লাম। উপরে বকুল গাছের ঘন পাতা। নিচে হলদে সবুজ দুর্বা ঘাসের নরম গালিচা। সামনে স্বচ্ছ জলের শান্ত লেক। দুপুরের প্রচন্ড গরমে থমথমে পরিবেশ। বেঞ্চিতে শুয়ে পড়লাম। রঙিন কাঁচের ফ্রেমে আপন ভুবনকে আটকালাম। আকাশে বিচিত্র রঙের ফানুস উড়ালাম। মনের সুতা দিয়ে দুষ্প্রাপ্য সুখ পায়রাগুলোকে বেঁধে রাখলাম। এবং এক সময়ে নিচ্চুপ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
একসময়ে অদূর হতে ভেসে আসা কারুর অট্টহাসিতে জেগে গেলাম। হঠাৎ করে ঘুম ভাঙাতে মাথাটা ধরে গেলো। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্য অস্ত যাবে। অদূরে লেকের পাড়ে ঝোপের আড়ালে জোড়ায় জোড়ায় পুরুষ নারী। আমার বেঞ্চির ও পাশে একটি বাগান বিলাসের ঝোপ। তারই নিচে এক জোড়া দম্পতি। পুরুষটি হেলান দিয়ে বসে আছে মহিলাটির বুককে আশ্রয় করে। আধা শোয়া অবস্থায় পুরুষটি। মেয়েটি অবিরত কথা বলে যাচ্ছে। চোখে মুখে বিচিত্র ভঙ্গি এনে কথাগুলোকে ফুটিয়ে তুলছে। সুন্দরী মেয়েটি। ভাসা ভাসা দুটো নীল চোখ। নিচে দুধ আলতা রঙের ভরাটো গাল। রক্তিম অধরে সৌন্দর্যের ফুলঝুড়িগুলো তার অট্টহাসির ঝাঁকুনিতে চারদিকে বিচ্ছুরিত হয়ে যাচ্ছে। হাসির দাপটে মেয়েটির শরীরটা দুলে দুলে উঠছে। মন ভুলানো দৃশ্য! দুচোখে তাকিয়ে থাকলাম আমি। মুঘ্ধ হয়ে, অবিরত।
সাতাশে পড়া একটি বেকারের বঞ্চিত হৃদয়ে কি যেন একটা ব্যথা করুণ হয়ে বাজতে থাকলো।
হঠাৎ করে পুরুষটিকে ঠেলে দিয়ে মেয়েটি দাঁড়িয়ে গেলো। হাতের চিকন হলদেটে আঙ্গুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে দিলো। পাশের পুরুষটি আমার দিকে এগিয়ে এলো। ক্রোধে পুরুষটির গা কাঁপতে থাকলো। পুরুষটি গর্জে উঠলো,…
আপনাদের চরিত্রটাকে কি গঙ্গা জলে ডুবিয়ে দিয়েছেন নাকি সাহেব! বেহায়ার মতো মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকেন! মা বোন নেই নাকি আপনার বাড়িতে? অসভ্য জানোয়ার কোথাকার! ...
মেয়েটিকে নিয়ে পুরুষটি চলে গেলো। বাঁদরের বাচ্চা বাঁদর! এখানে এসে না বসলেই হতো! অসভ্য বেহায়া! জানোয়ারের মতো জনসমক্ষে নোংরামি করতে আসিস! লাথি মেরে দিতাম না! চলে গেলি কেন?..
বেঞ্চি ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। ওদের অমানবিক ব্যাবহারে মাথায় রক্ত টগবগ করে ফুটছে
আমার!
রক্ত প্রবাহের শব্দ শুনতে পাচ্ছি আমি। ফেনিল লাল রক্তকণিকা। প্রবল ঝাঁকুনি আসছে আমার সর্ব শরীর জুড়ে। মহা প্রলয়ের দাঙ্গা বেজে উঠবে এক্ষুনি! সমস্ত পৃথিবী ভেঙ্গেচুরে চুরমার করে দেবো আমি! তছনছ করে দেবো ভাগ্যবানদের ভাগ্যলিপি! ছিনিয়ে আনবো আমার ভাগ্য এই কঠিন মুঠিতে! ছিনিয়ে আনবো আমার প্রকৃত পাওনা! চিৎকার করে বাতাসে ছড়িয়ে দেবো আমার কন্ঠ…. আমিও মানুষ! আমারও বাঁচার সাধ আছে! এ পৃথিবাটা কারোর একার নয়! এই পৃথিবীটা কারুর একার নয়!.... দিক হতে দিগন্তে মিলিয়ে যাবে আমার কণ্ঠ! আমার কণ্ঠধ্বনি আর আমার কাছে ফিরে আসবে না। প্রান্তর থেকে প্রান্তরে প্রতিধ্বনিত হয়ে বাজতে থাকবে! প্রলয় ঘন্টার মতো বাজতে থাকবে! দিকে দিকে! প্রলয় হবে ভাগ্যবানদের ভাগ্য! ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে তুলো তুলো হয়ে উড়তে থাকবে! আকাশে
বাতাসে! মহাশূন্যে!
আমি এক ব্যর্থ বেকার। আমাকে আপন করে নিতে পারেনি এই পৃথিবী। পৃথিবীটা ঘুরছে আর ঘুরছে। পৃথিবীর এই অস্থির ঘূর্ণনের পাঁকে পড়ে সব মানুষেরাও ঘুরছে। যার যার আপন বলয়ে। অস্থির
হয়ে। এই ব্যর্থ যুবকের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কারোর কোনো সময় নেই! সবাই এখন ব্যস্ত! মহাব্যস্ত! নিজস্ব আঙ্গিনায়! নিজস্ব বলয়ে!
কিছুক্ষণ পরে সমস্ত দুনিয়া জুড়ে আঁধার নামবে। ভাগ্যবান পুরুষদের সারা অন্তর জুড়ে শান্তি নেমে আসবে। আমিও তো মানুষ! রক্ত মাংসের জল-জ্যান্ত মানুষ! আমিও শান্তি চাই! বুক ভরে শান্তি চাই!
রমনা পার্ক ছেড়ে সামনের ব্যস্ত রাস্তায় পা বাড়ালাম।
মনের
ভেতর প্রকাণ্ড একটা জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড ধাউ ধাউ করে জ্বলছে।
সেই অগ্নিপিন্ডের আগুন নেভাতে আমি এখন কদম্বিনির কাছে যাচ্ছি।
কোন মন্তব্য নেই
50